Header Ads Widget

Responsive Advertisement

অন্ধকার রুমে শুয়েই পাশে কোল বালিশ ভেবেই এক মেয়েকে জড়িয়ে ধরে মুখ ডুবিয়ে দিলাম। এ কেমন ঘ্রাণ। খেয়াল করে দেখলাম এটা তো কোল বালিশ না। আস্ত

 


অন্ধকার রুমে শুয়েই পাশে কোল বালিশ ভেবেই এক মেয়েকে জড়িয়ে ধরে মুখ ডুবিয়ে দিলাম। এ কেমন ঘ্রাণ। খেয়াল করে দেখলাম এটা তো কোল বালিশ না। আস্ত একটা মেয়ে।


দিলাম এক চিত্কার!


মেয়েটাও চিত্কার।


সাথে সাথে আম্মু রুমে এসে লাইট অন করল।


মোহনাঃ কিরে কি হলো!


সিয়ামঃ লাইট অন হতেই দেখি মিন্নি। পিচ্চি তুমি!


মোহনাঃ হ্যাঁ ও আজকেই চিটাগং থেকে এসেছে। তোর বোন জান্নাতর সেমিস্টার ফাইনাল। ওর রুম অফ করে পড়ার অভ্যাস তো জানিস। তাই মিন্নিকে বলেছিলাম এই রুমে রেস্ট নিতে। ও যে এই রুমে ভুলেই গিয়েছিলাম। আর তুই বা হঠাৎ করে কিছু না বলে এভাবে বাসায় এসে পড়বি এটাও জানা ছিল না তাই তোকেও বলা হয়নি।


সিয়ামঃ মা তুমিও যা করো না! 


আসলে আমিও ছুটিতে বাসায় আসলাম মাত্রই কেউকে না জানিয়েই। সারপ্রাইজ। আম্মু অনেক খুশি। লং জার্নি করে অনেক টায়ার্ড ছিলাম। তাই রুমে গিয়ে ফ্রেশ হবো ভাবলাম। রুম অন্ধকার। ব্যাগ রেখে সোজা ওয়াশরুমে গিয়ে শাওয়ার নিলাম। বের হয়ে শুয়ে পড়লাম বিছানায়। আর তারপরেই এইসব হয়ে গেলো। 


মিন্নিঃ লজ্জায় তো মাথা কাটা যাচ্ছে। ঘুমিয়ে পড়েছিলাম।


ভাইয়া এসে যেভাবে জড়িয়ে ধরলেন। কি শক্ত শরীর। আর্মি অফিসার বলে কথা। কি বলব বুঝতেসিলাম না। উঠে গিয়ে খালামনিকে বললাম চলো না ছাদে যায়। গল্প করব।


মোহনাঃ আচ্ছা চল। সারভেন্টদেরকে বলছি ছাদে কফি পাঠাতে।


সিয়ামঃ কেমন ম্যানারলেস মেয়ে। বড় ভাইকে দেখলে যে সালাম দিতে হয় এই কার্টিসিও জানে না।


মিন্নিঃ খালামনির সাথে অনেক গল্প করলাম। তারপর জান্নাত আপুর রুমে এসে পড়তে বসলাম।


জান্নাতঃ কিরে আজকে এসে আজকেই পড়াশোনা?


মিন্নিঃ কি করব। আমি তো আর তোমাদের মতো ব্রিলিয়েন্ট না যে একবার পড়লেই সব মনে থাকবে।


জান্নাতঃ হ্যাঁ এজন্যই তো সারাদিন পড়া লাগতেসে।


সিয়ামঃ ঘুম দিয়ে নিচে গেলাম। আম্মু টেবিলে ডিনার দিচ্ছিল।


মোহনাঃ উঠছিস? আয় খেতে বস।


সিয়ামঃ জান্নাত আর আব্বু কই?


মোহনাঃ জান্নাত আর মিন্নি খেয়ে পড়তে চলে গেছে। তোর আব্বুর আজকে আসতে লেট হবে।


সিয়ামঃ আচ্ছা মিন্নি মেয়েটা কেন আসছে?


কনেতাঃ এডমিশন কোচিং এর জন্য এখানে হোস্টেলে থাকবে বলছিল। আমিই জোর করে আনলাম। ছোট একটা মেয়ে। তাছাড়া এই শহরটা তো আর চিটাগং এর মতো না। চিটাগং এর মানুষ যেমন কনজারভেটিভ এখানকার মানুষ তো তেমন না। আমি তো আরো তোর আয়েশা খালাকে বলে রেখেছি যে তুই ছুটিতে আসবি। ওকে পড়া দেখিয়ে দিবি।


সিয়ামঃ হোয়াট! ঐ গাধারাম মেয়েটাকে আমি পড়াব! নো ওয়ে!


মোহনাঃ এটা কেমন কথা। এস এস সি তে এ প্লাস ছিল ওর। মোটামোটি ভালো ছাত্রীই তো ও।


সিয়ামঃ আরে তোমার মনে নাই ক্লাস এইটে ও ম্যাথে কত পাইসিলো। ৩৪! পুরো ফ্যামিলিতে কেউ আর এত খারাপ রেজাল্ট করেছে?


মোহনাঃ সিয়াম তুই কিসব…


মিন্নিঃ খালামনি?


জান্নাত আপু আর আমি এক রুমে পড়তে বসাতে পড়া কম আর গল্প বেশি হচ্ছিল। তাই আমিই ডিসাইড করলাম ছাদে গিয়ে পড়ব। সারভেন্টরা জানাল চাবি খালামনির কাছে। তাই চাবি খুঁজতে এসেছিলাম। কিন্তু এসে সিয়াম ভাইয়ার কথাগুলো শুনে খুব খারাপ লাগল। কথাগুলো নতুন না। প্রায়ই শুনতে হয় আমার ক্লাস এইটের বীরত্বের গল্প। তাও সিয়াম ভাইয়ার মুখে শুনে কেন জানি মনে হচ্ছিল কেউ মনের উপর বুলডোজার চালাচ্ছে। চোখের পানি টলমল করছিল। কোনোরকম সামলে ” খালামনি… ছাদের চাবি টা লাগবে। ওখানে পড়ব”


সিয়ামঃ কি বললাম না বললাম সব শুনে ফেলল? যাক ভালোই হল শুনেছে। (মনে মনে)


মোহনাঃ কি করব ভেবে কুল পাচ্ছি না। মেয়েটা অনেক কষ্ট পেয়েছে। চাবি টা দিলাম “মন দিয়ে পড়। কফি পাঠিয়ে দিচ্ছি আমি। ” সিয়ামের দিকে তাকিয়ে ” কিছু মানুষকে দেখায় দে তুই কোন মাপের জিনিস। “


মিন্নি চলে গেল।


মোহনাঃ তুই পড়াশোনায় শার্প বলে সবাইকে হেয় করবি এটা তো ঠিক না। তোর কাছ থেকে তো এটা এক্সপেক্ট করিনি। তুইও তোর বাবার মতো অহংকারী রূপ ধারণ করলি?


সিয়ামঃ কথাগুলো বলেই মা চলে গেল। কিন্তু আমার মনের কথা কেউকে বোঝাতেও পারি না। আমার পিচ্চি মিন্নিটাকে আমি কত ভালোবাসি। কিন্তু আমার এই অনিশ্চিত জীবনের সঙ্গে আমি ওকে জড়াতে চায়না। আমি একজন আর্মি অফিসার। আমার নিজের জীবনের কোনো ভবিষ্যত নেই। ওকে সেইফটি দেওয়ার কথা ভাবব কি করে। তাই ওর কাছ থেকে সবসময়ই দূরে থাকার চেষ্টা করি।


মিন্নিঃ এই প্রথম মা বাবার কাছ থেকে দূরে থাকছি। সেখানে এসে এইসব শুনতে হচ্ছে। চোখের কোণার পানি চেপে পড়ার চেষ্টা করছি। আমার মতো স্ট্রং মেয়ের চোখে পানি মানায় নাহ। এসব ভেবে টেবে মন দিয়ে পড়তে লাগলাম। খালামনিদের বাড়িটার সামনে বাগান। পেছনে একটা গেস্ট হাউজ। ছাদে বড় এক সুইমিং পুল। পাড়ে দোলনা। তাই পুরো বাড়িতে ছাদটাই বেশি পছন্দের আমার। আর রাতের বেলা এত লাইট জ্বলে যে দিন কি রাত বোঝা মুশকিল। দোলনায় বসে পড়ছিলাম। পড়তে পড়তেই ঘুমিয়ে পড়লাম।


সিয়ামঃ ঘুম আসছিল না। ভাবলাম সুইম দিয়ে আসি। তাই ছাদে গেলাম। গিয়ে দেখি পিচ্চিটা ওখানেই ঘুমিয়ে পড়েছে। কোনো ডিসিপ্লিন নাই মেয়েটার। এতক্ষনে হলে তো ওকে আর্মি থেকে কোর্ট মার্শিয়ালই করে দিতো।


কিছু না ভেবেই কোলে তুলে নিলাম। ওর চুলগুলো মুখে এসে পড়ছে। ওর নেশায় ডুবে যাচ্ছি। নিজের ইমোশনকে কন্ট্রোল করলাম আর ওকে জান্নাতর পাশে শুইয়ে দিলাম। জান্নাত ঘুম। তাই আলতো করে ওর কপালে একটা চুমু দিয়ে চলে গেলাম।


সকালে


মিন্নিঃ উঠে দেখি আমি জান্নাত আপুর রুমে। রাতে তো ছাদে পড়তেসিলাম। এখানে স্লিপ ওয়াক করে আসলাম নাকি।


ঘড়ির দিকে তাকালাম। ৯ টা বাজে। ফ্রেশ হয়ে ডাইনিং রুমে গেলাম। খালুকে দেখতে পেয়ে সালাম দিলাম।


পলাশ সাহেবঃ ওয়ালাইকুমুসসালাম। (ইডিয়ট মিডল ক্লাসেস)


সার্ভেন্টঃ মিন্নি আপ, ম্যাডাম এন জি ওর কাজে একটু বাইরে গেসেন। আর জান্নাত আপুও পরীক্ষা দিতে চলে গেসে। আপনি উঠলে আপনাকে নাস্তা দিতে বলে গেসেন। বসেন আপনাকে নাস্তা দি।


পলাশঃ হোয়াট! এটাও শুনতে হচ্ছে! আমার ঘরে ৭ টার পরে নাস্তা? মানে তুমি এতক্ষনে ঘুম থেকে উঠেছ? তোমরা মিডল ক্লাসরা এজন্যই হোল লাইফ মিডল ক্লাস থেকে যাও। লাইফের প্রতি সিরিয়াসনেস নাই। পকেটে নাই আট আানা আয়েশ করতে চাও ষোল আনা। ডিসগাস্টিং পিপল! নিজের বাপের কোনো আত্তা পাত্তা নাই। চাচাকে বাবা বানিয়ে বসে আছে। মোহনাও এন জি ও চালাতে চালাতে ঘরটাকে আশ্রম বানিয়ে ফেলেছে।


সিয়ামঃ বাবা! .. নিচে এসে বাবার কথাগুলো শুনে মাথা আর ঠিক থাকল না ” কি যা তা বলছ তুমি। “


পলাশঃ ঠিকটাই বলেছি। এখন তুই তোর মায়ের মতো শুরু করিস না। দিনটাই খারাপ করে দিল আমার! ( বলেই হন হন করে অফিসের জন্য বেরিয়ে গেলাম)

মিন্নি ততক্ষনে কান্না করতে করতে দৌড়ে ছাদে চলে গেছে।


সিয়ামঃ না! আর পারছি না। হোক অনিশ্চিত ভবিষ্যত। তাও ওকে আমার করেই ওর প্রাপ্য সম্মানটা দিব। প্রেমের জন্য রেডি হও পিচ্চি।


মিন্নিঃ আর পারিনি চোখের পানি আটকাতে। কারণ এবার কথা আমার ফ্যামিলিকে নিয়ে হচ্ছিল। সুইমিং পুলের পাড়ে দাঁড়িয়ে কান্না করছিলাম। হঠাৎ টের পেলাম পিছন থেকে কেউ একজন আমাকে জড়িয়ে ধরে আমার চুলে মুখ গুজেছে। সিয়াম ভাইয়া! পিছনে ফিরে ”ভাইয়া কি কর…”


সিয়ামঃ এই! আরেকবার ভাইয়া বলবা তো এমনভাবে জড়িয়ে ধরব যাতে শরীরের হাড্ডি সব গুঁড়ি হয়ে যায়।


মিন্নিঃ কি বলছেন এইসব আপনি…


সিয়ামঃ “চুপপপ”….ওকে এক হাতে আরো কাছে টেনে আনলাম। অন্য হাত ওর চুলের মাঝে দিয়ে ওর গালের সাথে আমার নাক লাগিয়ে বলতে লাগলাম ” ভলোবাসি তো পিচ্চি। এতদিন নিজের অনিশ্চিত ভবিষ্যতের কথা ভেবে তোমাকে দূরে রেখেছি। কিন্তু আর না। আর কখনও যদি ভাইয়া ডেকেছ তো দেখবে কি করি। সিয়াম। শুধু এই পিচ্চির সিয়াম”.. কথাগুলো বলেই ওর চোখের পানি মুছে দিলাম আর ওর দুই চোখের পাতার উপর কিস করলাম।


মিন্নিঃ কেউ দেখলে ঝমেলা হবে। সরেন না।


সিয়ামঃ বাড়িতে তো কেউ নেই। আর ছাদে আসতে তো ছদের দরজা বন্ধ করে এসেছি। ( দুষ্টুমির হাসি দিয়ে)


মিন্নিঃ উনির মতলব তো ঠিক দেখছি না। উনিকে ধাক্কা দিয়ে পেছনে সরাতে গিয়ে উল্টে পেছনে সুইমিং পুলে পড়ে গেলাম।


সিয়ামঃ সিটট! ও তো সাঁতার পারে না!


সিয়ামঃ ও সাঁতার পারে না। তাই সাথে সাথে লাফ দিলাম। ওকে টেনে তুলে বুকের সাথে জড়ালাম। ও ও আমাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরল বাচ্চাদের মতো। হাঁপাতে থাকল। ” ঠিক আছো তো? “


মিন্নিঃ হুম..


সিয়ামঃ ওর ভেজা মুখ..ভেজা চুল…সব আমাকে যেন উম্মাদ করে দিচ্ছে। আরো কাছে টানছে ওর। আচমকা আমার ঠোঁট ডুবিয়ে দিলাম ওর গালে।


মিন্নিঃ হঠাৎ আমার গালে উনির ঠোঁটের ছোঁয়াতে কেঁপে উঠলাম আমি।


সিয়ামঃ ধীরে ধীরে ওর চুল বাম কাঁধে সরিয়ে দিয়ে এক হাত ওর কোমরে দিয়ে ওকে নিজের সাথে মিশিয়ে নিলাম। তারপর আমার মুখ বাড়ালাম ওর ডান কাঁধে। মুখ ডুবিয়ে দিলাম। তৃষ্ণার্তের মতো ভালোবেসে যাচ্ছিলাম। এত বছর নিজের মধ্যে আগলে রাখা ভালোবাসা আজ কোনো বাঁধা মানতে চাইছে না।


মিন্নিঃ উনির এমন ব্যবহারে আমার হার্ট যেন দশ গুণ বেশি বিট করছে। উনিকে ছাড়ানোর চেষ্টা করছি। আর না পেরে কান্নাই করে দিলাম।


সিয়ামঃ সুইমিং পুলের ঠান্ডা পানিতে যখন দুজনে ভিজে একাকার হঠাৎ আমার কাঁধে উষ্ণ কিছু টের পেলাম আমি। ওর গলা থেকে মাথা তুলে দেখলাম ও কাঁধছে। আর ঐ উষ্ণ পরশ ওর চোখের পানিরই। ওকে কোলে নিয়ে পুল থেকে তুললাম। ওর দুই গালে হাত দিয়ে ” সরি সরি। প্লিজ কান্না থামাও।


মিন্নিঃ 😭😭😭


আমার_সাহেব

ফাহিম_চৌধুরী 


নেক্সট পার্ট পেতে ফলো করুন

Post a Comment

0 Comments