ইভা কিছুক্ষণ আগেই ধ*র্ষ*ণ হয় নিজের চাচাতো ভাই দ্বারা রাতের অন্ধকারে। চৌদ্দ বছরের মেয়েটার মুখে ভাষা নেই, চোখে আলো নেই।
তার বুক ওঠানামা করে না বললেই চলে, যেন নিঃশ্বাসগুলোও ঘুমিয়ে পড়েছে য*ন্ত্র*ণার ভারে।
চাচি আম্মু পাশে বসে আছেন।
শাড়ির আঁচল দিয়ে মেয়েটার মুখ মোছেন, কপালে হাত রাখেন,
আর কাঁপা গলায় বলে ওঠেন,
“মা, কিছু বলিস না, শুধু চোখ বন্ধ করে থাক। আমি তোকে কিছুতেই ভে*ঙে পড়তে দেব না।”
চাচি আম্মুর গলা কাঁপে, কিন্তু মুখে দৃঢ়তা।
সেই মেয়েটিকে কোলে তুলে মানুষ করেছেন তিনি—মায়ের জায়গাতেই ছিলেন এতদিন।
আজ যেন নিজের মেয়েই পড়ে আছে ওর সামনে,
নিঃসঙ্গ, নিঃশব্দ, অবিচারের ভারে বেঁকে যাওয়া শরীর নিয়ে।
চাচা শারাফাদ মির্জা ঘরের দরজার কাছে এসে দাঁড়িয়ে আছেন অনেকক্ষণ,
ভেতরে ঢোকার সাহস হয়নি এখনও।
দরজাটা খোলা, কিন্তু পা যেন জমে গেছে জায়গাতেই।
ভেতরে মেয়েটা পড়ে আছে, চোখ বন্ধ করে,
নড়াচড়া নেই।
চোখ মেললে কী বলবে, কী মুখ দেখাবে, কিছুই ভেবে পাচ্ছেন না।
জীবনে এমন অ*স*হা*য় তিনি আগে কখনও হননি।
এই মেয়েটা তো শুধু ভাইয়ের কন্যা নয়,
তার নিজের মেয়ের মতো।
ভাই বেঁচে থাকতে হাতে হাত দিয়ে বলেছিলেন,
“ইভা যেন কখনো ক*ষ্ট না পায়।
ভাই, আমি তোমার মেয়ে আগলে রাখব নিজের সন্তানের মতো।”
সেই কথা দিয়েছিলেন বুক ঠুকে,
বলেছিলেন, “এই ঘরে সে আসবে মাথা উঁচু করে, নিজের ঘরের মেয়ে হয়ে।”
আজ কী দিয়ে মুখ দেখাবেন, কার সামনে দাঁড়াবেন?
অন্য কেউ এই ক্ষ*তি করলে হয়তো তিনি আকাশ ফুঁড়ে বিচার চাইতেন,
কিন্তু অ*প*রা*ধী তো তারই ছেলে,
তার র*ক্ত,
তার ঘরের মানুষ।
শারাফাদ মির্জা চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকেন,
কান পেতে রাখেন ভেতরের নিস্তব্ধতা শুনতে।
চাচি শামিমা মির্জা ভেতরে মেয়েটার মাথায় হাত রেখে বসে আছেন।
চোখে জল নেই, মুখে যে দৃঢ়তা তা যেন পাহাড়ের মতো।
তারা তো মেয়েটিকে মানুষ করেছেন নিজের হাতে,
ফুলের মতো করে রেখেছিলেন।
আজ সেই মেয়েই নিজের ছেলের হাতে—
না, বাক্যটা মাথার ভিতরেও শেষ করতে পারেন না তিনি।
শারাফাদ মির্জার মনে হয়, এই মুহূর্তে যদি পৃথিবীর সমস্ত আলো নিভে যায়,
তবু তা অনেক কম য*ন্ত্র*ণা বয়ে আনবে,
তার বুকের ভেতর থেকে উঠে আসা দগদগে অনুশোচনার তুলনায়।
***
ফ্ল্যাশব্যাক......
ইভা পড়াশোনা শেষ করতে করতে রাত অনেক হয়ে যায়। উঠে গিয়ে হাতমুখ ধুয়ে জামা কাপড় পাল্টে নেয়, একটা হাতা কা*টা শর্ট টি-শার্ট আর হাঁটু পর্যন্ত টাউজার প্যান্ট। তারপর নিচে চলে যায় আইসক্রিম আনতে, খেয়ে ঘুমোবে সে।
নিচে যেতেই দেখা হয় সারাফের সাথে, তার চাচাতো ভাইকে। সারাফ মাত্রই ফিরেছে বাসায়, ড্রি*ঙ্ক*স করে। নে*শা চড়েছে, তার প্রতিদিনকার ঘটনা এটি। কিন্তু আজ এভাবে ইভাকে দেখে নে*শার অবস্থায়, ইভার না*ভির দিকে চোখ পড়তেই এখন লো*লু*প আক*র্ষণ জাগে তার। ইভা কিছু না বলেই তাড়াতাড়ি করে চলে যায় উপরে, নিজের রুমে। মনের আনন্দে আইসক্রিম খেতে থাকে। এই বয়সে তার বোঝার বোধ হয়নি সারাফের দৃষ্টিতে কি ছিলো।
এদিকে সারাফ বারবার ইগনোর করতে চাইলেও নিজের শ*য়*তা*নকে আর ব*শী*ভূ*ত করতে পারল না। মাথায় ছড়িয়ে পড়ল অন্ধকার, আর তাতে জন্ম নিল সে নি*র্ম*ম বিপত্তির। সারাফ হঠাৎই ইভার ঘরে ঢুকে দরজা আটকে দিল। ইভা কিছু বুঝে ওঠার আগেই হা*ম*লা চালাল সে। তারপর গুমোট আ*ক্ষে*প আর আ*র্ত*না*দের শব্দ চারপাশে ছড়িয়ে পড়ে।
ইভার চেঁচা*মেচির শব্দে একসময় ঘুম ভেঙে যায় সারাফাত এর মা বাবার দরজা হাজার বার খুলতে বললেও খুলেনি। দরজা ভা*ঙার ও উপায় নি কারণ আ*প*ত্তি*কর অবস্থায় কিভাবে দেখবে তাদের।
***
সারাফ আরামেই ঘুমোচ্ছে এখন নিজের ঘরে। আর পার্সোনাল ডাক্তার এনে ইভাকে চিকিৎসা দেয়া হয় যেন এই খবর বাইরে না পৌঁছায়।
শারাফাদ মির্জা ছেলের ঘরে ঢুকে ছেলেকে ঘুম থেকে তুলে জোর করেই বলল,
“সারাফ, তোমার আর ইভার বিয়ে খুব শীঘ্রই হবে। এটা সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে, আর আমরা আগে থেকেই এটা চাইতাম। আগামী শুক্রবার তোমাদের বিয়ে, এটাই আমার শেষ কথা। আর একটা বাক্যও যেন আমি না শুনি।”
কথাগুলো খুব ক*ড়া ভঙ্গিতে বলেছে নিজের ছেলেকে, এছাড়া আর কোনো রাস্তা সে পাচ্ছে না।
সারাফ বিষয়টা মেনে নিতে পারে না, কারণ এসব বিয়ের মধ্যে সে নেই।
“কিন্তু বাবা…”
সারাফ কিছু বলার আগেই শারাফাদ মির্জা থামিয়ে দেয়, কঠিন স্বরে বলল এবং রুম ত্যাগ করল।
সারাফও কম না, সে মনে মনে ছক ক*ষে ফেলল কী করবে। সে বি'র'ক্ত ইভার ওপর, এই মেয়েটার জন্য তাকে ফাঁ*স*তে হলো। এই মেয়েকে সে জীবনেও বিয়ে করবে না। আর আজকাল এটা স্বাভাবিক ব্যাপার কেন এত সিরিয়াস হবে? তার মা-বাবা তো এমনিতেই এই মেয়েকে জায়গা দিয়েছে। তারা আর তার বিনিময়ে মেয়েটার এই সামান্য বিষয় মেনে নেয়া উচিত। সারাফ কখনো ন*ত হয় না ,নেভার নট পসিবল।
চলবে......
Part-1
Story: Wrong_Or_Right?
0 Comments